Sunday, 20 July 2014

গাজার পথে পথে লাশের সারি

 
 
 
 
 

গাজার পথে পথে লাশের সারি

 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৪০০-এ পৌঁছেছে। গাজার রাস্তায় রাস্তায় পড়ে আছে বহু লাশ। হাসপাতালগুলো ভরে গেছে আহত ফিলিস্তিনি নারী-শিশু-পুরুষে। আন্তর্জাতিক নানা মহলের উদ্যোগ- আহ্বানও ইসরাইলি বর্বরতাকে থামাতে পারছে না। এ দিকে ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস দাবি করেছে, তারা এক মেজরসহ ১৭ ইসরাইলি সেনা হত্যা ও বেশ কয়েকটি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা রেডক্রসের অনুরোধে গতকাল দুই ঘণ্টার জন্য গাজায় মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়ে ইসরাইল ও হামাস। তবে সময় শেষ হওয়ার আগেই ইসরাইলি সেনারা আবার হামলা শুরু করে। খবর  আলজাজিরা ও বিবিসি।
গাজার পূর্বাঞ্চলের শুজাইয়া জেলায় গতকাল ভোর থেকে বিরামহীনভাবে ট্যাংকের গোলাবর্ষণ শুরু করে ইসরাইলি সেনারা। একটি মিনিটের জন্যও গোলাবর্ষণ বন্ধ করছে না তারা। রোববার সেহরি শেষে যখন ফজরের আজান হচ্ছিল, তখনো ট্যাংকের গোলা ও ভারী মেশিনগানের গুলি অনবরত ছুটছিল। আজানের শব্দ ছাপিয়ে গোলার শব্দই শোনা যাচ্ছিল। শুজাইয়ার একজন বাসিন্দা আলজাজিরাকে বলেন, সেখানে নির্বিচার গণহত্যা চালানো হচ্ছে। রাস্তায় রাস্তায় লাশের সারি পড়ে আছে। জরুরি বিভাগের মুখপাত্র আশরাফ আল কুদ্রা বলেন, শুজাইয়া থেকে রোববার ভোরে কয়েক ডজন লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হয়েছে। কিন্তুঅব্যাহত গোলাগুলির কারণে অনেক লাশ উদ্ধার করা যাচ্ছে না। সাবাহ মামলুক (৪০) হাসপাতালে এসেছেন তার মা ও দুই মেয়েকে নিয়ে। তিনি এএফপিকে বলেন, বিরতিহীনভাবে সব জায়গায় গুলি চলছে। শুজাইয়ার মতো অন্য জেলাতেও একইভাবে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী।
গত শুক্রবার রাতে গাজা উপত্যকায় চার শিশুসহ একই পরিবারের ৯ জন নিহত হয়েছেন। তাদের লাশ দাফন করা হয়েছে শনিবার। নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, তাদের বাড়িতে একই সাথে ইসরাইলি পদাতিক বাহিনী সমরাস্ত্র, ছোটখাটো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। ভয়াবহ সে হামলা ধ্বনি-প্রতিধ্বনি ওঠে পুরো গাজায়। আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যায় রাতের গাজার আকাশে উঠে গেছে। এসব দৃশ্য দূর থেকে সিএনএনসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল সরাসরি প্রচার করেছে।
হাসপাতালে এখন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ লাশ ও আহত লোকজনে ভরে গেছে। বিশেষ করে গুরুতর আহত শিশুদের কান্না অসহনীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এ পর্যন্ত ১৮ বছরের কম বয়সী অন্তত ৭৩টি শিশু নিহত হয়েছে ইসরাইলি গোলার আঘাতে। কয়েকটি আন্তর্জাতিক শিশুবিষয়ক এনজিও জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি যোদ্ধা যতজন নিহত হয়েছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি শিশু মারা গেছে। আহত  শিশুদের কষ্ট দেখে মা-বাবা দেয়ালে আঘাত করা ছাড়া কিছুই করতে পারছেন না।
এ দিকে গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে ইসরাইলে বিােভ হয়েছে। হাজার হাজার ইসরাইলি নাগরিক ইসরাইলের তেলআবিব ও হাইফা শহরের রাস্তায় বিােভ করেছেন। শনিবার বন্দরনগরী হাইফার উত্তরাঞ্চলে বিােভের সময় ফিলিস্তিনপন্থী বিােভকারী ও ইসরাইলের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন বিােভকারী আহত হয়েছেন এবং ৩০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
অবরুদ্ধ গাজার ওপর অন্যায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে তেলআবিবেও হাজার হাজার মানুষ বিােভ করেছেন। এসব বিষয়ে ইসরাইল ও পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো ব্যাপক গোপনীয়তা রা করছে।
ইসরাইলের বাইরে লন্ডনেও বড় ধরনের বিােভ হয়েছে। এ সময় বিােভকারীরা ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে সে­াগান দেন।

No comments:

Post a Comment