২০০৮
সালে জরুরি অবস্থার সময় করা এই মামলা না চালানোর সিদ্ধান্ত দুদকের উপ-পরিচালক
(আইন) সাবেরা সুলতানা খানম তাদের আইনজীবীদের একটি চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছেন, যা বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমের হাতে এসেছে।
দুদকের
বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ বিএনপি করে আসার
মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের গোপালগঞ্জের এই নেতার বিরুদ্ধে মামলা চালাতে দুদকের অনীহার
বিষয়টি প্রকাশ পেল।
দুদক
কর্মকর্তা মোজাহার আলী সরদারের করা এই মামলায় শেখ আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে ৪২ লাখ ২
হাজার ৫৯১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ
আদালত-৫ এ বিচারাধীন ছিল।
মামলাটি
দায়েরের পর তা বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে যান শেখ আব্দুল্লাহ। হাই কোর্ট মামলার
কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেয়ার পাশাপাশি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানাতে রুল দেয়।
চূড়ান্ত
শুনানির পর ২০১০ সালের ১৮ অগাস্ট হাই কোর্টের সেই সময়কার বিচারপতি মো. শামসুল হুদা
ও বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকের বেঞ্চ মামলা বাতিলের রায় দেয়।
ওই
রায়ের পর ২০১১ সালের এপ্রিলে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের আবেদন করে
দুর্নীতি দমন কমিশন।
সম্প্রতি
বেশ কয়েকবার মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে। সর্বশেষ গত সোমবার প্রধান
বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের কার্যতালিকায় মামলাটি ৩১ নম্বর
ক্রমে ছিলো। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে ওই দিন মামলাটি ‘নট
টুডে‘ করা হয়।এর
মধ্যে গত ৮ জুন দুদকের উপ-পরিচালক সাবেরা সুলতানা সুপ্রিম কোর্টে দুদকের মামলা
পরিচালনাকারী আইনজীবীদের উদ্দেশে ওই চিঠি পাঠান।
চিঠিতে
বলা হয়, “আদিষ্টহয়ে জানাচ্ছি যে, জনাব শেখ মো. আব্দুল্লাহ
কর্তৃক দায়েরকৃত ক্রিমিনাল মিস কেসে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আইনজীবী নিয়োগ করা
হয়, যার প্রেক্ষিতে রায়ের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল দায়ের করা
হয়েছে।
“দুর্নীতি দমন কমিশন গত ০৮-০৬-২০১৪ তারিখের সিদ্ধান্ত
মোতাবেক ওই ক্রিমিনাল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল ‘নট প্রেস’
করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক
কমিশনকে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে বলা হলো।”
চিঠিটির
বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সুপ্রিম কোর্টে দুদকের মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী মো.
খুরশীদ আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই
মামলার আইনজীবী এম এ আজিজ খান। তিনিই হয়ত এ বিষয়ে বলতে পারবেন।”
আপিল
বিভাগে এ ধরনের মামলা ‘নট প্রেস’ করার ফলাফল সম্পর্কে জানতে
চাইলে তিনি বলেন, তার মানে হচ্ছে, দুদক এই মামলাটি আর চালাবে না। হাই কোর্টের রায়ই
বহাল থাকবে।
পরে
এই মামলার আর চালানোর সুযোগ আছে কি না-জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন,
“সে রকম সুযোগ নেই।”
বিষয়টি
জানতে যোগাযোগ করা হলে আইনজীবী এমএ আজিজ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে
বলেন, “অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড (এওআর) মামলাটি নট প্রেস করতে একটি আবেদন
দিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আমি জানি না। অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডই এটা
বলতে
পারবেন।”না
চালানোর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কারণ কী
বলবে? যখন করা হয়েছিল, তখন বলা হয়েছে, মামলা করতে হবে, মেরিট আছে। করেছি। এখন
(দুদক) বলছে, করব না। তাই করব না।”
আর
কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে এ ধরনের নির্দেশনা দুদক দিয়েছে কি-না, জানতে চাইলে আজিজ
খান বলেন, “সেটা আমি জানি না। কারণ হলো এগুলো এওআর ফাইল
করেছেন। তারাই বলতে পারেন।”
‘নট প্রেস’ করার ফল জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তার
মানে আমরা মামলা চালাব না। আমরা ছেড়ে দিলাম।”
এক
প্রশ্নের জবাবে আজিজ খান বলেন, “নট প্রেস করতে চাইলে আমার তো
সেখানে যাওয়া ঠিক হবে না। এওআরকে লেটার দিয়েছে, এওআরই করবে। আমি হয়তো থাকব না।”
No comments:
Post a Comment