ঘুম কাতুরে মন্ত্রীকে নিয়ে বিপাকে সরকার
প্রচণ্ড ঘুম কাতুরে আর নানা কর্মকাণ্ডে ইতোমধ্যেই বিতর্কিত হয়ে পড়া
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীকে নিয়ে বিপাকে আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী
লীগ। ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর গত সাত মাসে
একাধিকবার পত্রিকার শিরোনাম হন তিনি। তার বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে ফেসবুকসহ
সামাজিক মাধ্যমগুলো একাধিকবার সমালোচনার ঝড় উঠে। এ সব নিয়ে সিনিয়র
মন্ত্রীদের ধমকও হজম করেন তিনি। কোনো কোনো অপকর্মের জন্য প্রকাশ্যে সংবাদ
সম্মেলন ডেকে ক্ষমাও চেয়েছেন এ মন্ত্রী। এতকিছু পরও তিনি কোনো কিছুর ধার
ধারেন না। সর্বশেষ গত বুধবার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা হোসেন
পুতুলের পাশে বসে সারাক্ষণ ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেন প্রধান অতিথির আসনে বসা
বিতর্কিত এ মন্ত্রী।
সভায় প্রতিবন্ধীবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হলেও কখনো কপালে হাত, কখনো
ডান হাতের ওপরে মাথা, কখনো আবার বাম হাতের ওপরে মাথা রেখে ঘুমিয়েছেন
অনুষ্ঠানের এই প্রধান অতিথি। বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখেননি মন্ত্রীর পাশে
বিশেষ অতিথির আসনে বসা অটিজম ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার জাতীয়
উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা হোসেন পুতুলসহ অন্যান্য
অতিথি। তবে এ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করতে গেলে সাংবাদিকদের বাধা দিয়ে
মন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান বলেন, ‘মন্ত্রী প্রোগ্রামে
গেলে এভাবেই ঘুমায়। মানুষের তন্দ্রা ভাব আসতেই পারে। তাই বলে ছবি তোলা এবং
ছাপানো সাংবাদিকের কোনো ইথিক্সে পড়ে না।’
মন্ত্রীর এই ঘুম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে
আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠেছে। অনেকে মন্ত্রীর ঘুমের নিউজের লিঙ্কটি শেয়ার
করেছেন। বেশ কিছু মন্তব্যের কারণে ‘্যাপা মন্ত্রী’ খেতাব পাওয়া আওয়ামী
লীগের এই নেতা সম্পর্কে অনেকে বিরূপ মন্তব্যও করেছেন।
আগের দিন মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সম্প্রতি
টাঙ্গাইলে যৌনপল্লী উচ্ছেদকারীদের শিরñেদ দাবি করে এই মন্ত্রী বলেন,
‘প্রাচীন এই যৌনপল্লী যেসব মাওলানা উচ্ছেদ করেছেন তাদের সৌদি আরবের আইনে
শিরñেদ করা উচিত’। এ সময় নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের ঘটনার জন্য মিডিয়ার
সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, ‘ওই ঘটনা নিয়ে মিডিয়া অনেক বাড়াবাড়ি করেছে।
তাই সরকার মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন আইন করছে।’
এর আগেও আলোচিত এই মন্ত্রী সিলেটে বিজিবি স্কুলে শিক্ষার্থীদের এক
অনুষ্ঠানে মঞ্চে বসে প্রকাশ্যে ধূমপান করে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন।
বিভিন্ন মিডিয়ায় তার সেই ছবি প্রকাশ করা হলে বিপাকে পড়ে সরকার। একপর্যায়ে
সেই আচরণের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী। তবে বিতর্ক পিছু
ছাড়েনি এই মন্ত্রী। সিগারেট কেলেঙ্কারির পর পাসপোর্টবিহীন তিন সঙ্গী নিয়ে
ভারত সফরে যান তিনি। মন্ত্রিত্বের জোরে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন তাদের ছেড়ে
দিলেও ভারতীয় ইমিগ্রেশন তাদের আটকে দেয়। মন্ত্রীকে ছাড়া মন্ত্রীর তিন
সঙ্গীকে ফেরত পাঠায় আসাম। এ নিয়ে আসামের একটি দৈনিক পত্রিকা ফলাও করে
রিপোর্ট প্রকাশ করলে আবারো আলোচনায় আসেন তিনি।
No comments:
Post a Comment